নির্বাসিত শব্দমালা

(১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে সংঘটিত লংগদু হত্যাকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে)

হে আমার নির্বাসিত শব্দমালা –
মিছিলের শত শত আলোড়িত হৃদয়ে তোমাদের ডাক এসেছে।
শতাব্দীর বঞ্চনার বিস্ফোরণোন্মুখ ক্ষোভে তোমরাও হও শামিল।
গিটারের স্মৃতিকাতর মুর্ছনায় তোমাদের আরাধনা শুনেছি;
অন্তঃপুরবাসিনীর চকিত চাহনিতে তোমাদেরই সন্ধান দেখেছি।

হে আমার অভিমানী শব্দমালা –
আহত আবেগের পরিচর্যা ছেড়ে
নিষ্পেষিত মানবতার শৃঙ্খলিত আন্দোলন এসে দেখে যাও।

আর কত শত জীর্ণ কুটির হিংসার দাবানলে ছাই হবে?
আর কত সহস্র মানুষ পৃথিবীর খণ্ডিত শরীরের উপর
ছুটে বেড়াবে?

হে আমার অপাঙ্‌ক্তেয় শব্দমালা –
পাহাড়ি ঢলের মত তোমরা নেমে এসে
চেতনার সামস্ত আবর্জনা ভাসিয়ে নিয়ে যাও।

কালবৈশাখীর হাওয়ায় হাওয়ায় তোমরা
মিশে যাও,
ছুটন্ত মেঘেদের ঘর্ষণে তোমরাও
গর্জে ওঠো,
চমকে তোলো পৃথিবীকে!

খরতপ্ত পাহাড়ে প্রান্তরে
তোমরা ঝাঁপিয়ে পড়,
সম্ভাবনার সমস্ত দিগন্ত খুলে
সমস্ত জীবনকে জাগিয়ে যাও।

এইতো সময়!

[লংগদুতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ঢাকায় ২১ শে মে, ১৯৮৯ অনুষ্ঠিত পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের একটি ঐতিহাসিক প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেওয়ার পর ডায়েরিতে টুকে রাখা আমার তখনকার কিছু অনুভূতি। এটি একাধিক জায়গায় আগেই প্রকাশিত হয়েছে, দু’একটি ক্ষেত্রে আমার অজান্তে। – প্রশান্ত ত্রিপুরা]

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান