সাঙদারি[*]
পটভূমি: দুইটি বিধ্বস্ত জীবন
দু’জন মদ্যাসক্ত ব্যক্তির বর্ণনা দিয়ে আমার এ আলোচনা শুরু করব। (তাদেরকে অনেকে হয়ত চিনতে পারবেন, আশা করি এতে কেউ ক্ষুন্ন হবেন না। ব্যক্তিবিশেষকে হেয় বা বিব্রত করার কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই, বরং, এ দু’জনের মধ্যে গোটা ত্রিপুরা সমাজের যে একটা করুণ বাস্তবতা প্রতিফলিত, তাই তুলে ধরতে চাই।) প্রথমজনের নাম ধরা যাক ত-ফা। যখনই পথে দেখা হয়, তাকে দেখতে পাই নেশায় টলছে, প্রলাপ বকছে। একবারই তাকে অ-নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দেখেছিলাম, খুব সকালে। তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দেখতে এতই অভ্যস্ত ছিলাম যে এদিন তাকে আমার অস্বাভাবিক লেগেছিল, তার অপ্রতিভ আত্মসচেতন রূপ দেখে এক ধরনের করুণা হয়েছিল তার উপর। অবশ্য এর এক ঘণ্টা পরেই সে তার ‘স্বাভাবিক’ অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল।
দ্বিতীয় জনকে ডাকব দ-ফা বলে। তাঁরও প্রায় একই অবস্থা। কথা প্রসঙ্গে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম একদিন, ‘আতা [দাদা], তুমি মদ ছাড়া থাকতে পার না?’ দ-ফার জবাব, সকালে এক বোতল আর সন্ধ্যায় আর এক বোতল না হলেই নয় তাঁর। পেটে মদ না পড়লে হাত পা কাঁপতে থাকে।
দু’জনই বাইরে খুব নিরীহ। বাংলা ছায়াছবির মাতাল লম্পট বা দুর্বৃত্ত চরিত্রদের সাথে তাদেরকে মেলানো যায় না। তাদের দেখে রাগ হয় না। বরং দুঃখ হয়। রাগ হয় বৈকি, নিজের উপর, সমাজের আর দশজনের উপর। আমাদের চোখের সামনে কিভাবে ত-ফা আর দ-ফার মত লোকেরা মদের কাছে তাদের জীবন, তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত, বিকিয়ে দিল?
আমার স্কুলজীবনের শুরুতে ত-ফা আমার সহপাঠী ছিল। আর দ-ফা ছিলেন আমার শিক্ষক। তাই তাদের এই পরিণতি আমার কাছে আরো বেশি পীড়াদায়ক। আর যখন তাদের সন্তানদের দিকে তাকাই, দেখতে পাই দারিদ্র্য, হতাশা ও অভিভাকত্বহীনতার অসহায় শিকার তারা এবং কেউ উদ্যোগী না হলে সময়ে তারা প্রায় নিশ্চিত ভাবেই মদের হাতে নিজেদের ছেড়ে দেবে। ত-ফার ছেলে ত-কে আমি একজন ভাল ছাত্র হিসেবে জানতাম। তার মধ্যে সৃজনশীলতার আভাসও দেখেছিলাম – একটা শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার সূত্রে। একদিন খবর নিয়ে জানতে পারি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডী পেরিয়েই তার স্কুলে পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। যে দ-ফা একদিন নিজে শিক্ষক ছিলেন, দেখলাম তাঁর দু’জন কনিষ্ঠ সন্তান অক্ষর জ্ঞান পর্যন্ত পায় নি, অথচ তাদের পড়াশুনার বয়স পেরিয়ে গেছে অনেক আগে! ত-ফা ও দ-ফার পরিবারের অবস্থা আর বিশদভাবে বলার কিছু নেই। যে কেউই তা কল্পনা করে নিতে পারেন।
ত-ফা ও দ-ফা দু’জনেরই সঙ্গতি ছিল সন্তানদের স্কুলে পড়ানোর। কিন্তু সন্তানদের প্রতি তাদের যতটুকু যত্ন, মনোযোগ ও ভালবাসা দেখানো উচিত ছিল – তা তারা দেখাতে পারে নি, কারণ তাদের শিরায় উপশিরায় ঢুকে গেছে ভালবাসার চাইতেও শক্তিশালী একটা উপাদান, একটা বিষ – মদ। প্রকৃতপক্ষে ত-ফা ও দ-ফা রীতিমত অসুস্থ। মদের কবল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করতে হলে ডাক্তারি চিকিৎসা অপরিহার্য হতে পারে।
এতো গেল মদ্যাসক্তির একটা চূড়ান্ত রূপ। এরকম উদাহরণ প্রায় প্রতিটা ত্রিপুরা গ্রামেই মিলবে। কিন্তু শুধু ত-ফা ও দ-ফাদের মত লোকদের শরীরে নয়, আমাদের গোটা সমাজ দেহে চলছে মদের মারাত্মক বিষক্রিয়া। ত্রিপুরাদের মধ্যে ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-শিক্ষা বঞ্চিত, তরুণ-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই যেভাবে কমবেশি মদ্যাসক্ত, সে অবস্থাকে সামগ্রিক আত্মহননের প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। আমাদের এই আত্মঘাতী প্রবণতাকে রোধ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এর জন্য চাই জীবনমুখী, আশাবাদী ও সংগ্রামী চেতনা এবং সংকল্পের ব্যাপক প্রসার। আশার বিষয়, এই চেতনা ও সংকল্প তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিদ্যমান। নিচে তারই একটা উদাহরণ দেওয়া গেল।
মদ্যাসক্তি নিয়ে তরুণদের ভাবনা
এ বছর [১৯৯১] বৈসু উপলক্ষে খাগড়াছড়ির বৈসু উদযাপন কমিটির তরুণ সদস্যরা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছিল। কমিটি একটি রচনা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করেছিল যার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা: “মদ্যপান ত্রিপুরা সমাজের অনুন্নতির অন্যতম কারণ”। বিভিন্ন স্কুল কলেজের মোট নয়জন ছাত্রছাত্রী রচনা জমা দিয়েছিল, তারা হল – বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, গীতা দেববর্মন, প্রতিমা রাণী ত্রিপুরা, মণিকা ত্রিপুরা, প্রভাত জ্যোতি ত্রিপুরা, সুচরিতা রোয়াজা, চিত্রা রোয়াজা, পুষ্পেশ্বর ত্রিপুরা ও কিশোর কুমার ত্রিপুরা। তাদের সবার রচনায় যে কটি বিষয়ে জোর ঐকমত্য প্রকাশ পেয়েছে সেগুলোর সারসংক্ষেপ এখানে দেওয়া হল:
১. চিরাচরিত প্রথানুযায়ী ত্রিপুরাদের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মদ এখনও একটি অপরিহার্য উপাদান। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মদের আশীর্বাদ না পেলে একজন ত্রিপুরার চলে না। আবুয়াক সুনাই [শিশু জন্ম উপলক্ষে আয়োজিত কৃত্য] থেকে শুরু করে বিবাহোৎসব, শ্রাদ্ধক্রিয়া – সবখানেই মদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বলা চলে। কিন্তু মদের ব্যবহার শুধু সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতেই আর সীমাবদ্ধ নেই, সব শ্রেণীর ত্রিপুরাদের মধ্যে দৈনিক ভিত্তিতে মদ্যপান চালু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় মদকে একটি সম্মানজনক সামাজিক পানীয় হিসেবে আর গ্রহণ করা উচিত নয়।
২. মদের অপব্যবহারের ফলে আসক্তরা যেমন নিজেরা দৈহিক, মানসিক ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি তাদের পরিবারে তথা গোটা সমাজে মদের ক্ষতিকারক প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। মদের কারণে বা মদকে উপলক্ষ করে দেখা দেয় পারিবারিক অশান্তি, আত্মীয়-পড়শিদের সাথে বিবাদ, এক কথায় সামাজিক অনৈক্য এবং বিশৃঙ্খলা।
৩. ত্রিপুরাদের নেতৃস্থানীয় ও শিক্ষিত অংশ মদের এই অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরিবর্তে নিজেরাই নেশায় বিভোর। মদের অভিশাপ থেকে গোটা সমাজকে মুক্ত করতে হলে এদের নিজেদের প্রথম আসক্তি থেকে মুক্ত হতে হবে।
৪. যে সমস্ত কারণে মানুষ মদ্যাসক্ত হয় পড়ে – হতাশা, সঙ্গদোষ, সর্বোপরি মদের সামাজিক প্রশ্রয় – সামগ্রিকভাবে এই কারণগুলোর মোকাবেলা করতে হবে।
৫. যে সমস্ত দরিদ্র পরিবার ও বৃদ্ধা বিধবারা মদ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে, তাদেরকে বিকল্প পথের সন্ধান দিতে হবে।
৬. তরুণ প্রজন্মের সামনে মদ্যাসক্তিমুক্ত একটি সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থার আদর্শ তুলে ধরতে হবে আর তরুণদের সংকল্পবদ্ধ হয়ে এই নতুন সমাজ গড়ার সংগ্রামে নামতে হবে।
মদ্যাসক্তির বৃহত্তর প্রেক্ষাপট
ত্রিপুরাদের জুমভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় এক সময় হয়ত মদের একটা সমর্থনযোগ্য স্থান বা ভূমিকা ছিল। কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ও সংস্কৃতিতে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে, অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক সবদিক থেকে আমরা যে বিপর্যয়ের মধ্যে আছি, মদ্যাসক্তির ব্যাপক প্রসারের ফলে এ বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠাতো দূরের কথা, আত্ম-বিধ্বংসী একটা আবর্তে আমরা আরো বেশি করে ডুবে যাচ্ছি।
সমাজতাত্ত্বিক বিচারে অবশ্য মদ্যাসক্তির প্রসার কোনো সমাজের অবনতির মূল কারণ নয়, বরং একটি লক্ষণ মাত্র, যা সচরাচর দেখা যায় বিভিন্ন কারণে সমাজ সংস্কৃতিতে ভাঙন দেখা দেওয়ার ফলে। কিন্তু এটাও ঠিক, মদ্যাসক্তির প্রসার সে ভাঙনকে ত্বরান্বিত করে। এরকম উদাহরণ অনেক আছে। যেমন উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মূল অধিবাসীদের বংশধর, যারা নেটিভ আমেরিকান নামে পরিচিত, তাদের মধ্যে মদ্যাসক্তি একটা বড় সমস্যা। এ অবস্থা সবসময় ছিল না। আনাস্তাসিয়া ষ্কিলনিক (Anastasia Shkilnyk) নামের এক গবেষক তাঁর ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত A Poison Stronger Than Love: The destruction of an Ojibwa community শিরোনামের গ্রন্থে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন কিভাবে কানাডার একটি পুনর্বাসন পল্লীতে ওজিবোয়ে (Ojibwa) সম্প্রদায়ভুক্ত লোকেরা মদ্যাসক্তির মাধ্যমে নিজেদের ধ্বংস ত্বরান্বিত করছে। এ পল্লীর লোকদের যখন [১৯৬৩ সালে] তাদের পুরানো বসতিগুলো থেকে সরকারি উদ্যোগে নতুন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়, তখন থেকেই মদ্যাসক্তির ব্যাপক প্রসার তাদের সমাজে দেখা দেয়। পাশাপাশি দেখা দেয় ব্যাপক হারে আত্মহত্যা, খুন খারাবি, সন্তানদের প্রতি অবহেলা। বাইরের আগ্রাসী শক্তিকে প্রতিরোধ করতে না পারা থেকে যে ক্ষমতাহীনতা ও অসহায়ত্বের বোধ এবং পরনির্ভরশীলতা জন্ম নেয়, সেসবই আত্মঘাতী রূপ নিয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এটা মন্দের ভাল যে ত্রিপুরাদের অবস্থা এখনও এত খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায় নি, কিন্তু এখনই সচেতন ও সক্রিয় না হলে আমাদেরও ফেরার পথ থাকবে না।
উপসংহার
ত্রিপুরাদের সমস্যা বহুবিধ। বহুযুগের রাজনৈতিক বঞ্চনার ফলে অর্থনৈতিকভাবে আমরা ক্রমশঃ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়েছি। শিক্ষার প্রসার আমাদের মধ্যে ঘটেনি, আমাদের সামাজিক ঐক্য অটুট নেই। কিন্তু এ অবস্থার জন্য ইতিহাস বা ভাগ্যকে দোষ দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের মধ্যে আনতে হবে সংগ্রামী মনোভাব, বিপ্লবী চেতনা, আর অনমনীয় সংকল্প যে, আমরা একটা সুস্থ, স্বাভাবিক ও উন্নত সমাজ হিসাবে আবার মাথা তুলে দাঁড়াবই যে কোনো মূল্যে। বিকেল হলেই বা বন্ধুবান্ধব জুটলেই নেশায় বুঁদ হয়ে বসে থাকলে নিজেদের বা সমাজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার কোনো অবকাশই আমরা পাব না। সময় হয়েছে জীবনকে সত্যিকার অর্থে ভালবেসে, আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে, মদ নামক বিষকে সমাজ দেহ থেকে ঝেড়ে ফেলার। আমাদের প্রত্যেককে প্রথমে নিজের সাথে যুদ্ধ করে নবচেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। আমরা যারা বয়সে তরুণ, যারা ভবিষ্যতের দিকে তাকাই জীবনমুখী, আশাবাদী ও সংগ্রামী চেতনা দিয়ে, আমাদেরকেই হতে হবে নতুন সমাজের অভিযাত্রায় অগ্রপথিক – সান্তুআ।[**]
পোস্ট স্ক্রিপ্ট
এ নিবন্ধ লিখে শেষ করার পর খবর এল, সম্প্রতি [খাগড়াছড়ির] গাছবান গ্রামের এক ব্যক্তি অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে মারা যায়। আমাদের সমাজে মদ্যাসক্তির বিরুদ্ধে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা যে কত জরুরি হয়ে পড়েছে, এই দুঃসংবাদ যেন তাই মনে করিয়ে দেওয়ার অপেক্ষায় ছিল। স্মরণ করা যেতে পারে, বৈসুর সময়েও [খাগড়াছড়ির] ঠাকুরছড়ায় এক ব্যক্তি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পুকুরে ডুবে মারা যায়। [খাগড়াছড়ি, জুলাই ২১, ১৯৯১]
~~~
সবশেষে একটা সুখবর
উপরে বর্ণিত সব তথ্য হল ১৯৯১ সালে যেমনটা আমি জানতাম। এরপর বহুবছর হল ত-ফা আর দ-ফা দু’জনেরই জীবনাবসান ঘটেছে। তবে নিবন্ধটি লেখার দেড় যুগ পর একটি বিষয় জেনে আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম, সেটা হল, ‘ত’ নামের যে ছেলেটি স্কুল থেকে ঝরে পড়েছিল বলে জানতাম, সে পরবর্তীতে নিজের পায়ে ভালোভাবেই দাঁড়াতে পেরেছিল, যার পেছনে তার নিজের চেষ্টা আর মায়ের উৎসাহ, দুই-ই ছিল। [এই কথাগুলি টীকা আকারে রয়েছে বর্তমান নিবন্ধের যে ভাষ্য আমার জাতিরাষ্ট্রের কিনারায় গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে, সেটির সাথে।]
টীকা
[*]এই লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯১ সালে, খাগড়াছড়ি থেকে প্রকাশিত সান্তুআ নামের একটি সামিয়িকীর ১ম সংখ্যা-য়, এবং পরে লেখকের প্রবন্ধসংকলন জাতিরাষ্ট্রের কিনারায়: প্রান্তিকতার খাদ থেকে স্বপ্নের মহাকাশে গ্রন্থের অংশ হিসাবে পুনঃপ্রকাশিত হয় ২০১৮ সালে। উল্লেখ্য, ‘সাঙদারি’ শব্দটি ত্রিপুরা ভাষায় ব্যবহৃত হয় আত্মীয়-স্বজন বলতে তেমন কেউ নেই, এমন মানুষদের বোঝাতে। এই ছদ্মনামে আমি [প্রশান্ত ত্রিপুরা] নিজের সম্পাদিত সান্তুআ পত্রিকায় লিখতে শুরু করেছিলাম, তবে দু’টি প্রবন্ধের পর এই ধারা আর রক্ষা করা হয় নি। (‘সাঙদারি’ ছদ্মনামে প্রকাশিত আমার দ্বিতীয় প্রবন্ধটিও এ ব্লগে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে, যেটি হল: মাণিক্য রাজবংশ, বুরাসা দেবতা এবং খুমপুই-এর কাহিনী।)
[**] ‘সান্তুআ’ শব্দটি, যেটি ককবরকে ব্যবহৃত হয় ‘তীর্থযাত্রীদের পথপ্রদর্শক’ অর্থে, এখানে ব্যবহার করা হয়েছে স্রেফ পথিকৃৎ অর্থে। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে খাগড়াছড়ি থেকে প্রথমে শুধু সান্তুআ নামে একটি সাময়িকীর প্রকাশ শুরু হয়েছিল, যেটির একজন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলাম আমি। সামিয়িকীটির নামে তৃতীয় বা পরের সংখ্যা থেকে ‘জার্নাল’ শব্দটিও যুক্ত হয়, এবং এই নামে (‘সান্তুআ জার্নাল’) এটি এখনো অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয় খাগড়াছড়ি থেকে। তবে এটি সম্পাদনা বা প্রকাশনার সাথে আমি বর্তমানে আর যুক্ত নই। সামিয়কীটির সাথে বর্তমান লেখকের আবেগিক সম্পৃক্ততার বিবরণ আরো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে আমার ‘সান্তুআ, যদি হারিয়েও ফেল দিশা, হাল ছেড় না’ নামের একটি লেখায়।